প্রথম পাতায় বড় করে লেখা আছে ৬১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। কিন্তু ভেতরে আছে ৬০টি। আবার ৩৪৫টি অধিদপ্তর ও অন্যান্য বাটন টিপে ভেতরে গেলে পাওয়া যায় ৩৫৩টি, যার মধ্যে তথ্য কমিশন দুবার আছে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অধিদপ্তরের নামগুলো বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো না থাকায় বিশাল তালিকা থেকে নিজের পছন্দেরটি খঁুজে পাওয়া দুষ্কর ও শ্রমসাধ্য। আবার প্রথম পাতার অনুসন্ধানে লিখে যে দরকারিটা খঁুজে পাবেন তাও নয়। পৃথকভাবে কলাপাড়া, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা ইত্যাদি লিখে সার্চ করে কিছুই পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার লিখে সার্চ করে শুরুতেই ‘হাসপাতালের তালিকা’ দেখা গেছে। আর তাতে ক্লিক করার পর পাওয়া গেছে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার হাসপাতালের তালিকা। এই বাতায়ন ধরে আপনার জেলা কিংবা উপজেলায় চলে গেলে সেখান থেকে আর বাতায়নে ফিরতে পারবেন না। অথচ এই সুযোগটি অনায়াসে রাখা যেত। মোদ্দা কথা, গুরুত্বপূর্ণ ও নাগরিকসেবার জন্য অনন্য হতে পারত যে পোর্টালটি, সেটি অনেক অযত্ন আর অবহেলায় তৈরি করা হয়েছে। শুধু তথ্যের সঠিকতাই নয়, তথ্যের মান ও তথ্যবিন্যাস নিয়েও হয়তো ভাবেননি এই ওয়েবসাইট নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
তথ্যের অসংগতি কতটা আছে বোঝার জন্য বেছে নিয়েছিলাম পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলাকে। সেখানে গিয়ে তো চক্ষু চড়কগাছ। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর (ইউপি) চেয়ারম্যানদের নাম, গ্রামের নাম ও সংখ্যায় নানা অসংগতি রয়েছে। তবে স্তম্ভিত হতে হয়েছিল ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রের ওয়েবসাইটে গিয়ে। দেখলাম জুন ২০১৪-এর শীর্ষ ২০ সেবাদানকারী কেন্দ্রের তালিকার শীর্ষে থাকা রাজৈরের ইশিবপুর ইউনিয়নের আয় হলো এক মাসে ১০ কোটি ৪৮ হাজার ৮৭৫ টাকা। যা এককথায় অসম্ভব! সবচেয়ে কম আয়কারী হলো উজিরপুরের হারতা ইউনিয়ন। তাদের আয় হলো ১,১৯,৬৩৮ টাকা। এক দিনের তালিকায় দেখা যায় নোয়াখালী সদরের নোয়াখালী ইউনিয়ন আয় করেছে ৩৩,৭৩০ টাকা। আর ৩ নম্বরে রয়েছে ‘অ্যাডমিন’। তার আয় ১২,০৭০ টাকা। তাহলে বুঝুন পুরো ওয়েবসাইটে ডেটা এন্ট্রি করার অবস্থাটি কী! আমাদের প্রত্যাশা, সবার মিলিত চেষ্টায় নিশ্চয়ই একদিন জাতীয় তথ্য বাতায়ন উৎকৃষ্টমানের একটি ওয়েব পোর্টালে পরিণত হবে, যার সংখ্যা নিয়ে নয় মান নিয়ে গর্ব করা যাবে। আর সাধারণ মানুষ সহজে সব দরকারি সেবা ও তথ্য এ পোর্টাল থেকে পাবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস